চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা নির্বাচন কার্যালয়। ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরিসহ অন্যান্য কার্যক্রমও বিরামহীনভাবে চলছে। প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের তালিকা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে। চসিক নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৭৭৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৪ হাজার ৮৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ৯ হাজার ৭৭২ জন পোলিং অফিসার। এছাড়া অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ হিসেবে মোট ১৬ হাজার ১৬৩ জন ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তার নতুন তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। নির্বাচনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে চার ওয়ার্ডে চারজন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় এসব ওয়ার্ডে পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হবে।
চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটির ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে ২১ মার্চ প্রথম দফায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এবার দ্বিতীয় দফায় ১৪ জুলাই পুনরায় চসিক নির্বাচন স্থগিত করা হয়। গত সোমবার নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আগামী ২৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেন।
জেলা নির্বাচনী কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, স্থগিত হওয়ার আগে ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কর্মকর্তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে ৮-৯ মাসে কর্মস্থল থেকে অনেকেই বদলি হয়ে গেছেন। অনেকে অবসরে গেছেন। কেউ কেউ মারা গেছেন। তাই নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তালিকাটি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নতুন তালিকা করতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি, আধা সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা নেয়া হেেয়ছে। তাদের যাচাই-বাছাইও প্রায় শেষের দিকে। এসব তালিকা থেকেই নতুন প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচন কর্মকর্তা যুক্ত করা হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ৩০, ৩৭, ৪০ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৬-এর প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে এসব ওয়ার্ডে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হবে
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের (সংরিক্ষত ওয়ার্ড নম্বর ৬) সাহিদা বেগম পারভীন, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, ৩৭ নম্বর উত্তর-মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হোসেন মুরাদ ও ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মারা গেছেন। এসব ওয়ার্ডে শিগগিরই তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে যারা প্রার্থী আছেন, তারা বহাল থাকবেন। তাদের আর নতুন করে মনোনয়ন জমা দিতে হবে না। নতুন প্রার্থীরা চাইলে ফরম নিতে পারবেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। নির্বাচনের জন্য ৪১ ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্র এবং ৪ হাজার ৮৮৬টি বুথ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রের জন্য প্রায় ১৬ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এবার চসিক নির্বাচনে মোট ভোটার ১৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭২৩ জন এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৫২ হাজার ৩২৯ জন। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে জানান, নতুন করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভোটের তারিখ ঘোষণার পর ভোট গ্রহণের নানা প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এছাড়া কয়েকটি ওয়ার্ডে পুনঃতফসিল হবে। এসব নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আমাদের ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা থাকবেন ১৬ হাজারের বেশি। ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।