জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাসের সামান্য রদবদলেই কিন্তু শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান যায়।
কোভিডের আতঙ্ক এখন নিত্যসঙ্গী। করোনার আবার অন্যতম লক্ষ্য শিশুরা, যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম থাকে। বাড়ির খুদে সদস্যটির প্রতি তাই এই সময় কড়া নজর রাখতে হবে। লকডাউনে সারা দিন বাড়িতে থাকছে শিশু। তার মধ্যেও তার শরীরস্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখতে হবে। নজর রাখতে হবে, তার বয়স অনুযায়ী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় যেন ঘাটতি না থাকে।
জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাসের সামান্য রদবদলেই কিন্তু শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান যায়। এর জন্য কিছু অভ্যাসের বদল জরুরি। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অম্লানকুসুম দত্তের কথায়, ‘‘শুধু খাবার পাতে লক্ষ রেখে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দিলেই শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে না। এখন এমনিতেই ধুলোবালি লাগিয়ে খেলতে পারছে না তারা। ফলে ‘আর্থ কানেকশন’ প্রায় হচ্ছে না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ধুলোবালিতে খেলাটাও জরুরি। তার উপর রোদে খেললে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিও কমে। কিন্তু এখন এ সবের সুযোগ নেই বলেই আরও বেশি সচেতন থাকতে হবে।’’ health care
কোন কোন বিষয়ে নজর রাখতে হবে? জানালেন অম্লানকুসুমবাবু।
আরও পড়ুন: করোনাকে হয়তো পুরোপুরি ধ্বংস করা যাবে না, মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

ঘুম: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পর্যাপ্ত সময় ঘুম খুবই কার্যকরী। কারণ ঘুম কম হলে মানসিক চাপ তৈরি হয়। যা মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ কমিয়ে দেয়। শিশুদের অন্তত ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। এর জন্য বাবা-মাকে অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে। শিশুরা যাতে কম্পিউটার গেম না খেলে বা দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন নিয়ে খেলা না করে, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। এই ডিভাইসগুলোও শিশুদের ঘুম কমিয়ে আনে। Health Care
অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক: শিশুদের সামান্য অসুখেই অভিভাবকেরা এত বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন যে, সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। অথবা তা না নিয়েই সাধারণ রোগব্যাধির বেলায় পরিচিত কিছু অ্যান্টিবায়োটিক শিশুকে খেতে দেন। এক শেরণির চিকিৎসকরাও কোনও না কোনও অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দেন। এতে চটজলদি রোগ সেরে যায় ঠিকই, কিন্তু ভিতরে ভিতরে শিশুকে আরও অনেক বেশি দুর্বল করে তোলে। অত্যধিক অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই শিশুকে যতটা সম্ভব অ্যান্টিবায়োটিক কম খাওয়ান। Shwapno Pharmacy
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া ও রক্তের অসুখে করোনার ঝুঁকি কতটা? উপসর্গই বা কী?
ফুড ডেলিভারি নয়: বাড়িতে বানানো খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করান শিশুকে। জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে রাখুন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ তাজা সব্জি ও ফল খাওয়ান। এই লকডাউনে ফুড ডেলিভারি খোলা। শিশুর বায়না মেটাতে সেখান থেকে খাবার অর্ডার এই মুহূর্তে না করাই ভাল। ঘন ঘন জাঙ্ক ফুড শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। দরকারে বাড়িতেই বানিয়ে দিন মুখরোচক এই সব খাবার।